বিভিন্ন হিসাব অনুযায়ী দৃশ্যমান মহাবিশ্বে প্রায় 300-400 বিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে, এর মধ্যে আমাদের সৌরজগত অবস্থিত মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে।
বিগ ব্যাং এর পরবর্তী সময়ে, উত্তপ্ত মিনিট পার্টিকেল গুলো মহাকর্ষ বলের কারণে একত্রিত হতে থাকে এবং বৃহৎ আকারের নক্ষত্র গঠন করতে থাকে। এই প্রক্রিয়া কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে চলতে থাকে। নিকটস্থ নক্ষত্র গুলো মহাকর্ষ বলের প্রভাবে একে অপরের কাছাকাছি আসতে থাকে এবং ধীরে ধীরে বিভিন্ন ছায়াপথ তৈরি হতে থাকে।
তবে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিটি সামান্য ব্যতিক্রম ভাবে তৈরি হয়েছিল। এটি দুটি ভিন্ন গ্যালাক্সির সমন্বয়ে আজকের মিল্কিওয়েতে পরিণত হয়। দশ হাজার মিলিয়ন বছর আগে দুটি পৃথক স্টেলার সিস্টেমে উৎপত্তি হওয়া নক্ষত্রের মিলন হলে তৈরি হয় মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি। এই নক্ষত্র দুটির একটি ছিল বামন ছায়াপথ যা আমরা গাইয়া-এনস্ল্যাডাস নামে অভিহিত করি এবং অন্যটি ছিল আমাদের গ্যালাক্সির মূল প্রজেক্টর, যা ছিল প্রায় চারগুন বড় এবং এক বৃহৎ ধাতুর সম্ভার। এই পৃথক গ্যালাক্সি দুটি প্রায় ত্রিশ হাজার মিলিয়ন বছর পূর্বে দুটি ভিন্ন স্টেলার সিস্টেমে গঠিত হয়েছিল এবং দশ হাজার বছর পূর্বে এদের মিলনের ফলে তৈরি হয় আমাদের আজকের এই গ্যালাক্সি।
মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিটি একটি বৃহৎ গ্যালাক্সি এবং গ্যাস ও ধূলিকণার সমন্বয়ে গঠিত। মহাবিশ্বে বিভিন্ন আকার এবং আকৃতির গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ রয়েছে। আমাদের ছায়াপথটি একটি বড় সর্পিলাকার ছায়াপথ। আমরা রাতের আকাশে যে সমস্ত তারা দেখি তার অধিকাংশই আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতেই অবস্থিত। অন্য গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের নক্ষত্রও দেখতে পাই, তবে এদের মধ্যে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির নক্ষত্র সংখ্যাই বেশি।
গ্যালাক্সির ভিতরে আমাদের অবস্থান থেকে মিল্কিওয়ের নক্ষত্রের সংখ্যা গণনা খুবই কঠিন, প্রায় অসম্ভভ। তবে বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক পরিক্ষা থেকে জানা যায় যে মিল্কিওয়ে প্রায় 200-300 বিলিয়ন নক্ষত্র নিয়ে গঠিত। এই নক্ষত্রগুলি একটি বৃহৎ ডিস্ক গঠন করে আছে যার ব্যাস প্রায় 100,000 আলোক-বর্ষ (1 আলোক-বর্ষ হল আলো প্রতি এক সেকেন্ডে 300000 কিলোমিটার অতিক্রম করে তবে এক বছরে যে দুরত্ব অতিক্রম করবে সেটি) আমাদের সৌরজগৎ আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে প্রায় 25,000 আলোক-বছর দূরে রয়েছে। পৃথিবী যেমন সূর্যের চারদিকে ঘোরে, তেমনি সূর্য মিল্কিওয়ের কেন্দ্রের চারদিকে ঘোরে যেখানে একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল অবস্থিত। আমাদের সূর্য মিল্কিওয়ের কেন্দ্রকে একবার ঘুরে আসতে প্রায় 250 মিলিয়ন বছর সময় নেয়।