মহাবিশ্ব ও পৃথিবী কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল সে সম্পর্কে বিভিন্ন প্রচলিত তত্ত্বের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত ও গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব টি হল “মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব” বা “বিগ ব্যাং” থিওরি। জর্জ ল্যামাটার কে আধুনিক বিগ ব্যাং তত্ত্বের প্রবর্তক বলা হয়।
এই তত্ত্ব অনুসারে, কোটি কোটি বছর আগে মহাবিশ্বের সবকিছুই একটি অতি উষ্ণ এবং অতিক্ষুদ্র বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত ছিল। এর ঘনত্ব এতটাই বেশি ছিল যে মহাজগতের সকল কণা ও শক্তি এই ক্ষুদ্র বিন্দুতে আবদ্ধ ছিল। অধিক ঘনত্ব, ভর ও তাপমাত্রার কারণে, এটি প্রবলভাবে বিস্ফোরিত হয় এবং প্রচণ্ড বেগে চারদিক বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়তে থাকে। এই বিস্ফোরণের পর বিক্ষিপ্ত কণাসমূহের খুব সামান্য অংশ “মিনিট পার্টিকেল” এ রূপান্তরিত হয়। এই ‘সামান্য’ কিন্তু বিশালত্বের দিক দিয়ে আমাদের কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
এরপর এই মিনিট পার্টিকেল গুলো ধীরে ধীরে শীতল হতে শুরু করে এবং মহাকর্ষ বলের কারণে একত্রিত হয়ে বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তু গঠন করা শুরু করতে থাকে। তবে এটি কোন দ্রুত প্রক্রিয়া নয়। লক্ষ কোটি বছর ধরে এ প্রক্রিয়া চলতে থাকে।
এই মহাবিশ্বের নক্ষত্র, গ্রহ, স্থান, কণা, শক্তি সবকিছু এই প্রক্রিয়ায় ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছে। এই তত্ত্বটিই আমাদের কাছে “বিগ ব্যাং” বা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব হিসেবে পরিচিত।
প্রায় ১৪ বিলিয়ন বছর আগে ধীরে ধীরে গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি এবং বিভিন্ন ধরণের মহাজাগতিক বস্তুর সৃষ্টি শুরু হয়। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন নক্ষত্রের মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি পর্যালোচনা করে প্রমাণ করেছেন যে মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এই প্রসারণ কেবল দুটি বস্তুর মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি নয়, এটি প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি। আর এটি কেবল তখনই সম্ভব যখন কোন বিস্ফোরণ প্রক্রিয়া শুরু করে, আর যা কি না বিগ ব্যাং এর অস্তিত্ব কেই প্রমাণ করে।